
পুষ্টিগুনে ভরপুর এক অসাধারণ সব্জি লাউ
লাউ ভারতীয় উপমহাদেশের একটা জনপ্রিয় সব্জি কিন্তু এর ইংরেজি নাম Bottle gourd। কচি লাউয়ের রং হালকা সবুজ, ভেতরে সাদা রংয়ের শাঁস। লাউকে সব্জি হিসাবে এবং এর গাছকে শাক হিসাবে খাওয়া হয়। লাউয়ের চেয়ে এর শাক বেশি পুষ্টিকর।
প্রতি ১০০ গ্রাম লাউয়ে, কার্বোহাইড্রেট- ২.৫ গ্রাম, প্রোটিন- ০.২ গ্রাম, ফ্যাট- ০.৬ গ্রাম, ভিটামিন-সি- ৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম- ২০ মি.গ্রা.,ফসফরাস- ১০ মি.গ্রা.,পটাশিয়াম- ৮৭ মি.গ্রা., নিকোটিনিক অ্যাসিড- ০.২ মি.গ্রা., ভিটামিন বি-১, বি-২, আয়রন আছে। লাউয়ের ৯৬ভাগ জল।
উপকারিতা:
১. লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ওজন কমাতে অত্যন্ত সহায়ক।
২. লাউয়ে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় এবং অদ্রবনীয় ফাইবার আছে। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে এবং হজম সংক্রান্ত সকল সমস্যা দূর করে।
৩. নিয়মিত লাউ খেলে অ্যাসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যার সমাধান করে।
৪. অদ্রবণীয় ফাইবার অর্শ এর সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
৫. লাউয়ে ফ্যাট ও ক্যালরির পরিমাণ খুব কম থাকার কারণে লাউ ওজন কমাতে সাহায্য করে। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতেও সাহায্য করে। লাউ একটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন সব্জি।
৬. লাউ এর মূল উপাদান হল জল তাই লাউ খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। যারা নিয়মিত রৌদ্রে কাজ করেন তারা লাউ তরকারী খেলে শরীর বেশ ঠান্ডা হয় এবং শরীরের ভেতরের অস্বস্তি দূর হয়।
৭. গ্রীষ্মকালে আমাদের শরীর থেকে যে অতিরিক্ত জল বের হয়ে যায় লাউ সেটার অভাব অনেকটাই পূরণ করে ফেলতে সক্ষম ফলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমে যায়।
৮. লাউ ত্বক ভাল রাখতে সাহায্য করে। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ত্বকের তৈলাক্ততার সমস্যা লাউ খেলে অনেকটাই কমে যায়।
৯. লাউতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যা আমাদের শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে ও শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
১০. লাউ একটা খুব ভাল ডিটক্সিফায়ার যা নাক থেকে রক্তক্ষরণ বন্ধ করে ও শরীর থেকে বিভিন্ন ক্ষতিকর পদার্থ সরিয়ে দিতে কার্যকরী।
১১. লাউতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ২৫০ গ্রাম লাউ থেকে আমরা ২৫ মি.গ্রা. ভিটামিন সি পাই, সারাদিনে ভিটামিন সি লাগে ৬৫-৯০ মি.গ্রা. এর মতো।
১২. লাউ থেকে ভিটামিন সি এবং দস্তা পাই তা ত্বকের অকাল বার্ধক্য ও কুঁচকে যাওয়াকে রোধ করতে সাহায্য করে। দস্তা আমাদের স্নায়ু ভাল রাখে ও সর্দি, কাশি ও জ্বর হতে বাধা দেয়।
১৩. লাউতে ভিটামিন বি থাকে যা চুলের অকালপক্ক্যতা রোধ করায় কার্যকরী।
১৪. লাউ খুব সহজে হজম হয়ে যায় তাই গরমকালে যখন আমাদের পাচনতন্ত্র একটু দুর্বল থাকে তখন লাউ খেলে তা খুব সহজেই হজম হয় যায়। গা গোলানো ও বমি ভাব দূর করে। লাউতে জল ও ফাইবারের মাত্রা বেশি থাকায় পাচনতন্ত্র ঠিক রাখে।
১৫. ক্ষতিকর খাবারদাবার খেলে যকৃৎ দূর্বল হয়ে পড়ে এবং লাউ যকৃৎ ভাল রাখে।
১৬. লাউতে কোলিন নামে একটি নিউরোট্রান্সমিটার রয়েছে যা মস্তিস্ক সতেজ রাখে এবং মানসিক অস্থিরতা, বিষণ্ণতা দূর করে।
খাওয়ার পদ্ধতি:
১. সকালে লাউয়ের রস খাওয়ার সবচেয়ে ভাল সময়
২. সব্জি হিসাবে রান্না করে খাওয়া যায়
৩. কাঁচা ফলের মতো খাওয়া যায়
Add new comment