
নারিকেল তেল এক প্রকারের অতি উৎকৃষ্ট উদ্ভিজ্জ ফ্যাট। এটা এতটাই উৎকৃষ্ট যে একে মায়ের দুধের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। এই উৎকৃষ্টতার কারণ হল "sodium monolauric acid". পৃথিবীতে "sodium monolauric acid" এর একমাত্র দুটো প্রাকৃতিক উৎস হল মায়ের দুধ এবং নারিকেল তেল। সুতরাং একমাত্র নারিকেল তেল বাচ্চারা হজম করতে পারে মায়ের দুধ ছাড়া, ঠিক সেই জন্যই সব বেবি ফুড তৈরির জন্য নারিকেল তেল ব্যবহার করা হয়। বাচ্চাদের "pancreatic juice" থাকে না সেইজন্য তাদের সবকিছু মুখের লালা দিয়ে হজম করতে হয়, অর্থাৎ নারিকেল তেল ছাড়া অন্য কোন ফ্যাট দিয়ে বেবি ফুড বানালে বাচ্ছারা হজম করতে পারবে না। তাহলে নিজেরা ভাবুন সেটা কত উৎকৃষ্ট ফ্যাট অথচ আমরা সেটাকে আমাদের ঘর থেকে বের করে দিয়েছি। "sodium monolauric acid" আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম তৈরী করতে সাহায্য করে, সেই জন্য মায়ের দুধ খেলে বাচ্চাদের আর কোন কিছুর প্রয়োজন হয় না, এমনকি কোন ভ্যাকসিনেশন এর দরকার নেই। কিন্তু মায়ের দুধের সাথে বাচ্চাকে যেন অন্য কিছু খেতে না দেওয়া হয় ৬ মাস পর্যন্ত। নারিকেল তেল হল পৃথিবীর সবচেয়ে ভাল জীবাণুনাশক ফ্যাট। কোথাও নারিকেল লাগিয়ে রেখে নিজেরা পরীক্ষা করতে পারেন, কোন জীবাণু সংক্রমণ হবেনা যতদিন নারিকেল তেলটা ভাল থাকবে। কেউ সারাজীবন তার ত্বকে নারিকেল তেল ব্যবহার করলে তার কোনদিন "Skin disease" হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না এবং ত্বক অসাধারণ সুন্দর হবে। সত্যকে সবসময় চাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে ব্যবসার জন্য। একটা সময় পর্যন্ত ভারতবর্ষে নারিকেল তেল রূপচর্চার জন্য ব্যবহৃত হয়ে এসেছে কিন্তু ১৯৯০ এর পর থেকে বিদেশী কোম্পানিগুলো তাদের ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য তারা ক্রমাগত মানুষকে তাদের দেশে উৎপাদিত তেলগুলোকে ভাল প্রমান করার জন্য আগ্রাসী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সেইজন্যই আজকাল মানুষ সেইসব নোংরা তেল কিনে তাদের সুন্দর চুল এবং ত্বকগুলো নষ্ট করছেন। যেকোন নূতন জিনিসকে গ্রহণ করার আগে একটু যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বিচার করা উচিত। দক্ষিণ-ভারতে নারিকেল তেলের বেশি ব্যবহারের কারণে সেখানকার মানুষের হৃদরোগ অনেক কম। সুতরাং আমরা সরিষার তেলের ব্যবহার কমিয়ে নারিকেল তেলের ব্যবহার বাড়িয়ে হৃদযন্ত্রকে অনেক বেশি সুস্থ রাখতে পারি।
নারিকেল তেল ব্যবহারের পদ্ধতি:
১. যে কোন নিরামিষ খাবার নারিকেল তেল দিয়ে প্রস্তুর করা যায়
২. গ্রীষ্মকালে নারিকেল তেল চুল এবং ত্বকে ব্যবহার করা যায়
৩. ত্বকে অল্প সংক্রমণ হলে নারিকেল তেল হালকা করে লাগিয়ে দিলে উপকার পাওয়া যাবে
৪. বেশি সংক্রমণে নারিকেল তেল সামান্য গরম করে লাগালে নিরাময় হবে
৫. অল্প গরম করে নারিকেল তেল চুলে লাগালে, চুল সংক্রান্ত সমস্যা দূর হবে
৬. শিশুদের খাবার নারিকেল তেল দিয়ে তৈরী করা উচিত যেহেতু এটি সহজপাচ্য
Add new comment